গানে আমার রবীন্দ্রনাথ
শুভম পর্ব
"তোমায় খোঁজা শেষ হবে না মোর "-- । খোঁজার -চেনার পথের , পথিক আমি.।তোমার "শেষ নাহি যে শেষ কথা কে বলবে "--
তোমার গানে আমার নারী -নাড়ি হতে না নড়ি- । সেই ছোট্ট বেলা --রবি খড়ি করিয়ে ছিলেন আমার ঠাকুরদাদা । কৃতজ্ঞ ,বাবা মা -কাকা -সঙ্গী সাথীর প্রতি । পরের প্রজন্ম আগ্রহী তোমার গানে ,কথায় , গল্পে ।ও হে আমার প্রজন্মের পর প্রজন্মের বন্ধু। সঙ্গীত গুরুমা" শ্রীমতি অঞ্জলি দে" তার ভালোবাসা এবং শেখানো প্রতিনিয়ত তাঁর গান -কথা সমৃদ্ধ করে। ফেরার পথে পিছন পানে চায় যে মন বারে বারে ।এত সম্ভার তাঁর ; শুধু গীতবিতান পড়ে উপলব্ধি করতে কত কাল যে কেটে যাবে তার ইয়ত্তা নেই ।স্বল্প জানায় তোমার তল পায় না ।তবুও তোমার উপমা তুমি রবি ঠাকুর ।তুমি রবি ,তুমি ইন্দ্র ,তুমিই ঠাকুর ।যে ঠাকুর কে সহজে স্পর্শ করা যায় ।
"তুমি ডাক দিয়েছ কোন সকালে কেও তা জানে না "--প্রথম ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে কিনতু আজ সর্বক্ষণ তোমার ডাক শুনি। মায়ের মত ,ওঠরে -পড় রে -খেয়েনেরে -স্নানকররে --তুমিও তাই । তোমার সাথে নাড়ির বন্ধন। খুঁজে পাই সর্বত্র-- ।দেখদেখি এ যে তোমায় গীতা -উপনিষদ সকল স্থানে খোঁজ পেরেছে। সাড়া তুমি দিয়েছো ।তাই গীতা ও গীতবিতান আজ একাকার। আলাদা গীতার প্রয়োজন নেই। "যদা যদা হি ধর্ম্যস্য গ্লানির্ভবতি ভারত। অভ্যূথানমধর্মস্য তদাত্মানাং সৃজাম্যহম "--- ।ধর্মের হানি ঘটলে তাঁর উপস্থিতি। এ ধর্ম মানব ধর্ম। তিনি রাজা --চির নতুনের সুর লেগেছে -- ।কচি পাতার অকারণ চঞ্চলতা তোমার গানের টানে।" শ্রদ্ধা বান লভতে জ্ঞানাং তৎপর সংযতেন্দ্রিয় --ভাল লব্ধা পরাং শান্তিমোচিরেনধিগচ্ছতি। "জ্ঞান লাভ করলে সম্মান পাওয়া এবং প্রদান উভয়ের সূত্রধর তুমি ।তোমার গান। মনোনিবেশ করলে বুদ্ধিনিবেশ ঘটে ।তোমার গান সেই পথ দেখায়। গানের চলন এমনধারায় বয়ে যায় -যেন বহমান নদী -এঁকে বেঁকে চলেছে ; সাগরে মিশবে । একাকার হতে সেথায় ; বিভেদ নেই ।সে মিলনক্ষেত্র। "এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে "-- । সর্ব ধর্ম সম্মেলনের মানব বন্ধন ।রবি ঠাকুরের গান -গল্প -কবিতা উপন্যাস । বন্ধনের অটুট বাঁধন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
রবীন্দ্রসঙ্গীত সর্বকালীন আধুনিক -এর চেয়ে আধুনিক হতে পারে না। থাকলে তা প্রমান সাপেক্ষ --তিনি প্রাণের আরাম -শান্তির নীড়। দিবে আর নিবে --মিলাবে আবার মিলিবে।
অন্ধকার হতে আলোর খোঁজে উপনিষদ ।তেমন তাঁর বাণী -সুর শুধুই এগিয়ে চলা - ।পিছিয়ে পড়া হল মিছে আশা। "অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো সেইতো তোমার আলো "-- ।সেইতো তোমার আমার ,সবার ভাল ।এত সহজ করে তাঁরই বলা।তাঁর গান অহংকারী কে নিরহংকারী -অজ্ঞান কে জ্ঞানের আলো দেয়।অসৎ কে সৎ এর পথ দেখায়। তাঁর গানে না চাইলে যারে পাওয়াযায়। স্বধর্মে থাক অন্য কে বাঁচাও ; বাঁচো ,বাঁচতে দাও। এই সনাতন ধর্ম তাঁর গানে গানে পাঠানো বারতা। মনের পুষ্টি ,দেহের পুষ্টি ্চেতনায় আনে সমাধান ।
"তোমায় দিতে পূজার ডালি বেড়িয়ে পড়ে সকল কালি "-- নিরহংকার হও ,অভিমানের ওপরে সম্মান এর স্থান রাখ ।গীতা বলে , যে দানে অহং মিশ্রন ,সে দান কোন শুভ কর্মে লাগেনা। তাঁর গান সেই কথায় বলে। জাগো ওঠ কাজ করো -ঘুমিয়ে থেকোনা -ভাগ্যের দোষ দিও না। তৈরি থাকো সুযোগ এলেই স্থান পাবে। "বিশ্ব যখন নিদ্রা মগ্ন গগন অন্ধকার --কে দেয় আমার বীণার তারে এমন ঝংকার --" শুধুই আলো- আলো । বলে ,দুঃখে না ভেঙে পড়তে। হে ঈশ্বর "পিতা বলে প্রণাম করি "-- ।তাঁর গানে ঈশ্বর আমার কাছের ।তাঁকে পেতে বাহ্যিক বাতুলতা ,দেখনদারি আয়োজনের প্রয়োজন নেই। মনের আয়োজন ই সব। পূর্বেও বলেছি ,আবারও বলছি সমস্তটাই ব্যক্তি নির্ভর ।কারো ওপর কিছু চাপানোর বিন্দু মাত্র চেষ্টা নয় । উপলব্ধির বিশ্লেষণ মাত্র ।ইচ্ছে হোল ,তাই ভাল লাগার জমির ফসল ।
"হবে হবে প্রভাত হবে আঁধার যাবে কেটে -তোমার বাণী সোনারধারা পড়বে আকাশ ফেটে "--বেদ -বেদান্ত - গীতা -উপনিষদ ,সর্ব ধর্ম সম্মেলন তাঁর গান । বাণী ও সুর স্মৃতি শক্তি বাড়ায় । ভাষা সমৃদ্ধ করে । সবই এই গীতবিতান। ধূলিকণার কোটি কোটি ভাগের একভাগ যদি জানি ; তবে তুমি নও চির অচেনা পরদেশী ।তুমি "গরব মম হরেছ প্রভু " ।বিপদে রক্ষাকর তুমি ।আঁধারে নীরব ব্যাথা দিয়েছ ঢাকি । আমার ঠাকুমার ঝুলি --ব্যাঙ্গমা -ব্যাঙ্গমী -সাতসাগর তেরোনদীর পারে রাজকুমারের ঘোড়ায় চড়া । রাজকুমারী কে খুঁজে আনার গল্প কথা --- । কল্পনার আধার রবি ঠাকুর ।" জল পড়ে ,পাতা নড়ে " --গায়ত্রী ছন্দ তুমি । তুমি ভাবনার জাল বোনার সাথী ।তুমি আমার "কাল ছিল ডাল খালি -আজ ফুলে যায় ভরে -বলদেখি তু্ই মালী হয় সে কেমন করে "- । ভরা ফুলের রঙিন সাজি তে উপচে পড়া সীমাহীন সুবাস তুমি । পাখীর মিষ্টি কুজন তুমি ।----মউসুমি