Friday 9 June 2017

কথা র সানাই
পর্ব -২
জন্মের পর থেকে সকলের নয়ন মণি মুখর ।সবাই মিলে নানান শব্দের খেলা খেলে ।কেও নাম ধরে ডাক দেয় তো আবার কেও পাখির ডাক ,কেও নানান জীব জন্তুর।ঝুমঝুমি বাজান হচ্ছে ।কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়া আসছে না ।কয়েক দিন পর ডাক্তার দেখানো হলে  পরীক্ষা করে জানান ; মুখর কান এ শুনতে পায় না ।এটি তার জন্ম থেকেই ।
শুনেই মা -বাবা খানিকক্ষণ স্তব্ধ--- বাড়ি ফিরে সিদ্ধান্ত , মুখর কে আর পাঁচটা বাচ্চার মতই মানুষ করতে হবে । ভেঙ্গে পড়লে চলবে না ।দ্বিতীয় সান্তানের পথে হাঁটলেনও না ।  পাছে মুখর অবহেলার শিকার হয় । যদি দ্বিতীয় তে পুনরাবৃত্তি ঘটে ।
মুখর পাঁচ এ পা দিয়েছে ।চিকিৎসকের পরামর্শ সাধারন বাচ্চা দের সাথে মেলামেশা করাতে হবে।সেই চেষ্টা শুরু ---
কেও বলে এই ওষুধ -ওই ওষুধ ।ছুটোছুটি চলছে। শেষ সমাধান--মুখর বিশেষ সন্তান ।ওর শিক্ষা পদ্ধতি ও বিশেষ। 
বাবা -মা মুখর কে বিশেষ বিদ্যালয়ে ভর্তি করালেন ।সেখানে দেখেন অনেক এই ধরনের ছেলেমেয়ে । বন্ধু হয়ে উঠলেন  অভিভাবক রা ।  বাচ্চারাও নতুন জীবন খুঁজে পেল ।প্রত্যেকের চোখের চাওয়া ভিন্ন ভিন্ন ।কিন্তু উচ্ছ্বাস প্রকাশের বার্তা কম বেশী প্রায় এক ধরনের ।
মুখরের আভিভাবকের চোখেমুখে বিরক্তির প্রকাশ কমই হত। মনের কষ্ট মনেই পুষে রাখতেন । প্রকাশ্যে অপ্রকাশিত ।

বিদ্যালয়ের পড়াশুনো ছাড়াও মুখর সাঁতার এ যায় ।তার বিশেষ পদ্ধতির সাঁতার প্রশিক্ষণ । দিনে দিনে সাঁতারে দক্ষ হয়ে উঠতে লাগল ।তার সাথে একদিন দেখাগেল  মুখর বাড়ির দেওয়ালে পেন্সিল নিয়ে চিত্র বিচিত্র --কি যেন কাটছে । মনে হয় কি যেন বলতে চায় ও ।
ওদের শেখান এমন অঙ্কন শিক্ষিকার কাছে দেওয়া হল ।সেই খানেও সে বেশ জমিয়ে দিয়েছে ।এভাবেই মুখর কে নিয়ে ভালমন্দে দিন কাট ছে ।
সাত -আট বছর যখন  ---মুখরের জীবনের ছন্দ পতন । বাবা অফিস থেকে ফিরল কিন্তু তার সাথে খেলা ধূলা করল না ---আদর করলনা---সেদিন অনেক লোকজন এসেছিল বাড়িতে ।বাবা শুয়ে ছিল ।বাবা কে সবাই মালা পড়িয়ে নিয়ে গেল ।  মা ,কাঁদছিল  মুখর মায়ের চোখের জল ছুঁয়ে ;মায়ের কোলে শুয়ে পড়েছিল ।কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিল টের পায়নি ।

প্রতিদিন মুখর বাবার আসার অপেক্ষায় থাকে ।মাঝে মাঝে বিশেষ শব্দ করে --দরজা খলে---- রাগের প্রকাশে শব্দটা উৎকট হয়ে ওঠে। ছুটে নিজের ঘরে চলে যায় ।মুখর-মা -বাবা ,তিনজনের ফটোর সামনে দাঁড়ায় ।
মনে কষ্ট মুখরের মা বোঝে  আচরণে ।দিনে দিনে সইল ---মুখর এখন যেন খুব যত্নবান মায়ের প্রতি ।মায়ের জামা -কাপড় গুছিয়ে রাখে ।বাড়ির অনেক কাজকম্ম করে ।মা স্কুল থেকে ফিরলে খুব আনন্দ ।ওর মত করে মা কে ওর স্কুলের কথা বন্ধুদের কথা বোঝায় ।রবিবারে মায়ের সাথে বাজার যায়। বেশ বোঝমান ,দুষ্টুমি একটু করে ।মা বলে অ্যায়ই ----।ওমনি খুশীর প্রকাশ ,মায়ের কোলে শুয়ে পড়া ।হুম; আজকাল রান্নাবান্নাও একটু আধটু করে । মায়ের সাথে  খুন্তি নাড়ে । মা উৎসাহ দেয় ...। স্বাবলম্বী হচ্ছে মুখর ।মা এইটাই চায়।-------
                                                                                                                         মউসুমী  



No comments:

Post a Comment