Sunday 27 August 2017

শুচি
শুচি এবছর মাধ্যমিকে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম কুড়িতে স্থান পেয়েছে। বাড়ির সকলের ইচ্ছে ও বিজ্ঞান নিয়ে এগিয়ে চলুক। কিন্ত ওর পছন্দ কলা শাখা। ওর বাবা -মা দুজনেই শিক্ষা জগতের মানুষ। আদর্শবাদীও ,সুতরাং মেয়ের ইচ্ছে ডানায় নতুন রং চাপিয়ে না দিয়ে ওড়ার জন্য পাখনা দুটি কে আরও মজবুত কোরে দিলেন। শুচি ওঁর পছন্দেতেই রইল। শুচির একটি ছোট্ট বোনও আছে ,তাকে রশ্মি। সে খুব মিষ্টি ,দিদির অন্ধ সহযোগী।  বাড়িতে সংগীতের পরিবেশ। দুই বোন উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নেয়। শুচির গলায় রসগোল্লার রসে মধুর  ভৈরবী নৃত্য করে।
শুচি সংগীত নিয়ে উচ্চশিক্ষায় এগোচ্ছে। তবে কঠোর নিষেধ কোনও মাচা অনুষ্ঠানে গাওয়া চলবে না। ও বাধ্য মেয়ে। এছাড়া আর  কোনো বিধি -নিষেধ নেই। মা -বাবার ইচ্ছে মানুষ হোক ,মানুষের পাশে দাঁড়ায় যেন ওরা। মহাবিদ্যালয়ে ওঁর খুব প্রশংসা। ও হ্যাঁ ,শুচি রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে পড়ছে ,তার সাথে চলছে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম। ছোট বেলা থেকে ও রূপের প্রশংসা শুনে এসেছে। প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে। ওর ও ভালো লাগে। কিন্তু ও বলে নিজেকে শুচি মাটি কে ভুলবিনা ,ওটাই তোর অস্তিত্ব।
মুখখানা পানপাতা বসানো ,চোখ -নাক সবকিছুই তাঁদের নিজের স্থানে সমৃদ্ধ। গায়ের রংখানা গম রঙে গমগম করে। চুল গুলো কবি চন্ডীদাসের কথায় "এলাইয়া বেণী ফুলেরও গাঁথনি "...লোকজনের না চলে নয়ন তারা।
ভাল -ভাল শুনে ক্লান্ত। লেখাপড়া -সংগীত -অঙ্কন -রূপের মাধুরী পূর্ণ ফুলের সাজি। পূজার অর্ঘ্য। এ যে প্রকৃতি দিয়েছে সাজায়ে তারে। ওঁর অভ্যেস প্রতিদিন শুতে যাবার আগে রবিঠাকুরের একটি কবিতা আর একটি গান গুনগুন করতে করতে ঘুমিয়ে পরে। আজও তাই সেই কবিতাটি ছোট্টমেয়ে র হারিয়ে গেছি আমি শেষ করে গাইছে "নিশিদিন মোর পরানে প্রিয়তম মম "..কোমল নিষাদ -গান্ধার -ধৈবত -ঋষভ নিখুঁত লাগানোর চেষ্টা চলছে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে।
কঠিন তাল সমৃদ্ধ গান বড়ো প্রিয়। শিক্ষক মন্ডলী ওর প্রতি বেশি যত্নবান। শুনেশুনে রপ্ত করে। গানে তাল -ছন্দ -মাত্রা -সম -ফাঁক নিয়ে খেলতে ভালোবাসে। দাদরা তাল কে এক তালে আনলে গানের মাধুর্য কেমন হয়। কাহারবা তাল কে ত্রিতালে আনলে কেমন হয়। ধামারের চোদ্দ মাত্রা ভেঙে সাত মাত্রা  তেওরা আনলে কেমন লাগে। এই ভাবনা ঘুরঘুর করে। ...মৌসুমী@

No comments:

Post a Comment