ভুল নম্বরে --
প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহে ঘরের দরজা -জানালা বন্ধ --শীততাপ যন্ত্রে গ্রীষ্মে শীতের আরামে মগ্ন --হঠাৎ ল্যান্ডলাইন ফোনের ঘন্টা বেজেই চলেছে --,সেটি ধরতেই এক বৃদ্ধা নারীর কণ্ঠ "হালো " ,এ প্রান্তে কম বয়সী মেয়ের কণ্ঠ স্বরে -আনন্দিত হয়ে বলেন , --একটু অঞ্জন কে দেবে মা। মেয়েটি হতচকিত হয়ে বলেন কে বলছেন ? -সে বলে সে কি তার ছেলে এই খানে চাকুরী করে । মেয়েটি বলে তিনি ভুল নম্বরে ফোন করেছেন।মেয়েটি ফোনটা নামিয়ে রেখে দেয়।
পরেরদিন ঠিক সেই সময় আবার ফোন --একটি বার অঞ্জন কে দাও না মা। এমাসে ছেলে এখনো তাঁকে টাকা পাঠায় নি। তার এখনই টাকার প্রয়োজন। ,ছেলে ওনাকে যেখানে রেখেছেন সেখানে প্রায় মাসখানেক হয়ে গেলো পেমেন্ট হয়নি। ,তারা টাকা পাওনা কথা জানিয়েছে। একথা শুনে মনটা খুব খারাপ হয়েগেলো মেয়েটার। বৃদ্ধা থাকেন কোথায় জিজ্ঞাসা করতেই তিনি সমস্ত কথা বলতে শুরু করেন। কোথায় আছেন--, তার ছেলের কথা।
বৃদ্ধা ছেলের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। বলেন যে ছেলে তাঁকে একটি কাগজে এই ফোন নম্বর টা লিখে দিয়েছেন। ছেলে এটাও বলেছে যে সে ব্যাঙ্ক এ চাকরী করে -দূপুরে সে ফাঁকা থাকে ,ওই সময় ফোন করলে কথা বলতে পারবেন বৃদ্ধা তাঁর ছেলের সাথে।
ফোনের এ প্রান্ত থেকে তাঁকে বোঝানো হয় যে এই ফোন নম্বরটি একটি বাড়ির ,কোনো ব্যাংকের ফোন নম্বর নয়।
মেয়েটি তাঁকে জানায় সে যারপরনাই দুঃখিত। এভাবেই প্রায় ছয় -সাত মাস মাসের প্রথম দিকে ফোন করতেন। বলা সত্ত্বেও মানতে চাইতেন না যে ছেলে এখানে কোনো কাজ করে না --,করার কথাও নয় । কারণ এটি একটি বাড়ির ফোন নম্বর। তিনি ভাবতেন যে মেয়েটি ইচ্ছে করে তার ছেলে কে কথা বলতে দিচ্ছেনা।
শেষ ফোনটি যে দিন এলো মেয়েটি তাঁকে বললো মাসিমা এই নম্বর টি তিনি কাউকে দেখিয়ে নিতে পারেন। টেলিফোন এর একটি বই আছে সেটিতে নামের পাশেই ফোননম্বর দেওয়া আছে। তার পর থেকে আর ওনার ফোন আসেনি। মেয়েটি এখনও তাঁর কথা ভুলতে পারেনি। সেদিন মনে মনে ঈশ্বর কে বলেছিল, হে ঈশ্বর বৃদ্ধা মা কে তাঁর ছেলের সাথে দেখা করিয়ে দাও। আর তিনি যেন কোনো ভুল নম্বরে ফোন না করেন।
No comments:
Post a Comment