Saturday 27 April 2019

বাঙালিয়ানা

সেই...দিন ,সে বাঙালিয়ানা ছিল। আলগোছা জীবনযাপন,বাড়িতে অনাবশ্যক জলসা সাথে চা,টা  এবং ভালোবাসা মেশানো নির্ভেজাল আড্ডা। খোঁজখবর নিয়ে ভালোথাকার কথা চলত। হঠাৎ অতিথি এলে,ডাল ,ভাত আর ভালোবাসা পরিবেশন এবং হাতে এঁটো চচ্চড়ি না হওয়া পর্যন্ত আর খাওয়া শেষ হোতে না হতেই  ও বেলার রান্না ঘরে কী রান্না হবে তাঁর আলোচনা।

রাঙা পিসি,ফুল খুড়িমা, সেজো জেঠিমা, মেজ কাকিমা,ন কাকা ডাক ও প্রায় বিস্মৃত। সেই নতুন পিসি ,মাসির হাতের তৈরি লেবু ,চিনি জলের শরবত আর তার সাথে মাটির কুঁজোর ভিজে কাপড় জড়ানো জলের সোঁদা সোঁদা গন্ধ। গ্রীষ্মের উপরি পাওনা। এবাড়ির রান্না ওবাড়ির রান্না বাটিতে চালান আবার রান্নার ফাঁকে কার কী রান্না হোল তার খোঁজখবর। অমুক দিদার সুক্ত, ন মাসির ডাঁটা পোস্ত, বকুল ফুলের সইয়ের দিদার বাটি চচ্চড়ি র স্বাদ মুখে আজও লেগে থাকার গল্প।

ভালো দু একটা সিনেমার গল্প, ভাল গানের আলোচনা, রেডিওর বিকেল চারটে থেকে  ছায়াছবির গান,রেডিওর নাটক এ শুক্লা বন্দ্যোপাধ্যায় এর  কন্ঠ স্বর আহা।

সকাল.. সন্ধ্যে এবাড়ির হিয়া নয়ত ওবাড়ির শ্রেয়ণ দের উচ্চঃস্বরে পড়ার আওয়াজ,পাড়ায় স্নেহময় অথবা স্নেহময়ীদের ভালো রেজাল্ট এ খুশি হওয়া  ,সন্ধ্যে গড়িয়ে আড্ডা দিলে ভালোবাসা মেশানো ধমক, তারা নিজের না হলেও।

অন্য বাড়ির ছেলে মেয়ের বিয়ে হলে,অনাবশ্যক আলোচনা,এবারে মেয়ের বিয়ে বেশি নয়ত ছেলের বিয়ে বেশি।
আবার এবাড়ির শশা মুলো তো ওবাড়ির আম ,কাঁঠাল বিনামূল্যে যাতায়াত করত। গরমের সন্ধ্যের পর কুলফি মালায়ের ঝুমঝুম যন্ত্রের আওয়াজের জানান স দেওয়া উফফফফ।
বাড়িতে অতিথি আসুক আর নাই আসুক বিকেল বিকেল গা ধুয়ে এক খাবলা পাউডার নিজে এবং বাড়ির অন্যদের ও মাখিয়ে শান্তি পাওয়া।
কত আনন্দ মেশানো জীবন। টিভি সিরিয়ালের যন্ত্রণা টাও ছিল না তাই স্বরযন্ত্রের সময় নেই।
এই বাঙালিয়ানা ভাবতেই বেশ আনমনা হয়ে যাই। নাইবা রইল সাথে ভাবতে কী এসে যায়!!

No comments:

Post a Comment