Friday 19 May 2017

অধরা মাধুরী 
চতুর্থ পর্ব
#মৌসুমী রায়

ইতিহাস কথা বলে।স্বচক্ষে দেখার ইচ্ছে-দেখা বাস্তবতার সামিল। উত্তরবঙ্গের বক্সা দূর্গ তাঁর নিদর্শন। ইতিহাস কে ছুঁয়ে দেখার বাসনায় বক্সা উদ্দেশ্যে রওনা।পদ যুগল আশ্রয় করে সঙ্গী সহায়ক নিয়ে চলা শুরু।  চড়াই -উতরাই পথ। চলতি পথে ক্লান্তি পথ আটকানোর চেষ্টায়।কিন্তু মন তখন জেগে উঠেছে -বলছে যা দেখে যা স্বাধীনতা এনেছেন যারা তাদের কষ্ট -তাদের চিন্তা ধারা। 
এভাবেই মনে মন কথায় কথায় কখন পৌঁছে গেলাম বহু প্রতীক্ষিত বক্সা দূর্গে। এখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামী দের বন্দী করে রেখেছিলো ইংরেজরা। তাঁদের কী কষ্ট যাপন করতে হয়েছিল তা আজও দ্বন্দ্ব  -দীর্ণ অবস্থায় দণ্ডায়মান।রক্ষনা বেক্ষনের বড়ই অভাব। অন্যান্য বন্দীদের সঙ্গী বন্দী ছিলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস। তাঁকে নিয়েই ইংরেজদের মাথার গন্ডগোল। সুতরাং বক্সা দুর্গ যে কী দুর্গম স্থান তা সহজেই অনুমেয়। ১৯৩১ সালে বন্দীরা শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে তাঁদের অসহনীয় অত্যাচার -নির্যাতনের কথা পত্র মারফৎ জানান। কবিগুরু যারপরন্যায় ব্যথিত 
  তাঁদের কষ্টে। তিনিও তাঁদের প্রত্যুত্তর পত্র পাঠান। তিনিও সমব্যাথী। লেখার মাঝে একজায়গায় লিখছেন "ফোয়ারার রন্ধ্র হতে -উন্মুখর উর্দ্ধ স্রোতে"--। দুটি চিঠির ফলক নির্মিত সেখানে। বন্দীদের পানীয় জল থেকে বঞ্চিত করার প্রকল্প নেয় ইংরেজরা।দূর্গ লাগোয়া জলাশয় বন্ধকরে দেয়। আজও সেখানকার বসবাসকারী জনগণ তাঁর ফল ভোগ করেচলেছে। 
একদিকে ইতিহাস ছুঁয়ে দেখার আনন্দ অপরদিকে স্বাধীনতা সংগ্রামী দের সংগ্রাম দুয়ের দ্বন্দ্বে  দ্বিখণ্ডিত। 
ফেরার পথে মনে হলনা পাহাড়ে ওঠার কষ্টের কথা।
  
পাশেই বয়েচলেছে জয়ন্তী নদী।কত ইতিহাসের সাক্ষী।কত জল বয়ে গিয়েছে -বইবে আরো কত ---
সেও এক অনন্য সুন্দরী দেহে -মনে। রূপে শুধু ভোলায়না গুণেরও মাধুকরী। বক্সার মধুর ক্লান্তি কে অনায়াসে লাঘব মন্ত্রে অনুরণন ঘটায় তাঁর বহমান ধারার ধারায়। 
ইতিহাস সাথেই চলেছে আর নিজেরা নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। ঈশ্বর কে শুধু কৃতজ্ঞতা -অনেক দিয়েছ নাথ। 
চলতে চলতে পথে রাজাভাতখাওয়া। দুই রাজার সন্ধি এবং ভাত খাওয়া। সেই ভাত খাওয়া আজও ভারত -ভুটান খেয়েচলেছে -চলবেও। শুধু খাওয়া নয় চলছে তার সাথে দাওয়া -ও। ------
  

No comments:

Post a Comment